আলেমওলামারা মনে করেন করোনাভাইরাস দিয়ে আল্লাহতায়ালা পথভ্রান্ত মানুষকে একটা ধাক্কা দিয়েছেন, যেন মানুষ এর চেয়ে বড় কোনো বিপদ আসার আগেই নিজেকে শুধরে নিতে পারে। জীবনের ভুলত্রুটি, গুনাহখাতার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে ফিরে আসে আলোর পথে। কিন্তু কই? মানুষের কি সেই বোধোদয় হয়েছে? যদি হতো তাহলে থার্টিফার্স্টের নামে এমন বেহায়াপনায় মেতে উঠতে পারত না। যে পাপের কারণে আমাদের মাথার ওপর করোনা নামক গজব ঘুরপাক খাচ্ছে সে পাপেই কী করে ডুবতে পারল তারা? অন্য ধর্মাবলম্বীদের কথা না হয় বাদই দিলাম। যারা মুসলমান দাবি করে তাদেরই বিরাট অংশ বর্ষবরণের নাম করে কুরুচিপূর্ণ নাচ-গান, বাদ্য, মদ, আতশবাজি আর হই-হুল্লোড়ে মেতে উঠেছে। তারা একটিবারের জন্যও সামাজিক দূরত্বের কথা ভাবেনি। শিশু-বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ কেউই বাদ থাকেনি এ ভয়াবহ গুনাহর কাজ থেকে। ঢাকা শহরের প্রতিটি স্পট, সবকটি হোটেল-রেস্টুরেন্ট, বাড়ির ছাদ এমন আলোকসজ্জায় সজ্জিত হয়েছে যা বিগত কোনো বছরই দেখা যায়নি। আফসোস! করোনার এমন ভয়াবহতা স্বচক্ষে দেখেও তারা নফসকে দমন করতে পারেনি। তাদের ধিক্কার জানিয়েই আল্লাহ বলেন, ‘এই সম্প্রদায়গুলোর প্রবৃত্তির অনুসরণ কোরো না, যারা আগে পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে। তারা সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে।’ সুরা মায়িদা আয়াত ৭৭। এসব পথভ্রষ্টর জন্যই পৃথিবীতে গজব নেমে আসে। পৃথিবী হয়ে ওঠে মৃত্যুপুরী। তাদের নিন্দা জানিয়ে নবী (সা.) বলেছেন, ‘অক্ষম ওই ব্যক্তি যে নিজেকে প্রবৃত্তির অনুসারী বানিয়েছে।’ ইবনে মাজাহ। করোনার তান্ডবে যেখানে বিশ্বের বড় বড় দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে সেখানে বাংলাদেশের মতো ছোট এই দেশের কী অবস্থা হয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। করোনায় অনেকেরই চাকরি নেই। থাকলেও বেতন ঠিকঠাক নেই। গরিব, দুস্থরা এক বেলা খেতে পারলে আরেক বেলা না খেয়ে থাকছে। টাকার অভাবে চিকিৎসাবিহীন মারা যাচ্ছে কত অসহায় মানুষ। স্কুল ছেড়ে কোমলমতি শিশুরা কেউ ভ্যান চালাচ্ছে কেউ বাসাবাড়িতে কাজ খুঁজছে।
লেখক : চেয়ারম্যান : বাংলাদেশ মুফাস্সির সোসাইটি।লেখাটি বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশ হয়েছে দেখতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন…